ভিসতা কারখানায় তৈরি হবে ‘অক্স’ এসি, হবে রপ্তানিও
বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশি ব্র্যান্ড ভিসতা। বিশ্বের দ্রুত অগ্রসরমান কোম্পানি চায়নার ‘অক্স’ ব্র্যান্ডের সঙ্গে এবার ‘যৌথ উদ্যোগ’ চুক্তি করল দেশীয় প্রতিষ্ঠান ভিসতা ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড। এর আওতায় বাংলাদেশে ভিসতার কারখানায় তৈরি হবে ‘অক্স’ ব্র্যান্ডের এয়ারকন্ডিশনার (এসি)। স্থানীয় বাজারের বিক্রির পাশাপাশি তা বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি হবে।
যৌথ উদ্যোক্তা হিসেবে সম্প্রতি বাংলাদেশের ভিসতা ও চায়নার ‘অক্স’-এর সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে। চায়নার নিংবো শহরে অবস্থিত অক্স-এর সদর দপ্তরে তাদের প্রধান আরঅ্যান্ডডি (গবেষণা ও উন্নয়ন) অফিসে ওই চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
ভিসতা ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড-এর পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সামছুল আলম। অক্স-এর পক্ষে স্বাক্ষর করেন পরিচালক (আরএসি, এশিয়ান অঞ্চল) জি ঝু লিঙ। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভিসতার ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান হোসেন আকাশ, পরিচালক মোহাম্মদ মাসুদ, পরিচালক (ব্র্যান্ড অ্যান্ড প্রমোশন) হাসিন ফারহান, অক্স-এর রিজিওনাল ম্যানেজার লনি ওয়াঙ, কান্ট্রি ম্যানেজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, এসকেডি ম্যানেজার গোল্ডেন ইয়াঙ, ন্যাশনাল ম্যানেজার জিয়ান সু, সেলস ম্যানেজার ওয়েঙ প্রমুখ।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগে চায়না সফরে ভিসতা টিম নিংবো শহরে অক্স-এর সদর দপ্তর ও কারখানাগুলো পরিদর্শন করেন।
ভিসতা ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান সামছুল আলম বলেন, অক্সের সঙ্গে চুক্তিটি করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আশা করছি ভিসতার মাধ্যমে বাংলাদেশে অক্সের একটি বড় বিনিয়োগও আসবে। অক্সের কাছ থেকে কারিগরি সহায়তাও মিলবে। বাংলাদেশেই তৈরি হবে দক্ষ জনশক্তি, তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থান।
এদিকে বাংলাদেশের একটি দ্রুত বর্ধিষ্ণু প্রতিষ্ঠান হিসেবে এরইমধ্যে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছে ভিসতা ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড। বিশেষ করে পণ্যের কোয়ালিটি বিচারে ভিসতা বাংলাদেশের বাজারে শীর্ষস্থানীয়। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভিসতা গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করেছে। ভিসতার পণ্যসম্ভারে রয়েছে রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, এয়ারকন্ডিশনার, হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে হাইটেক পার্কে ভিসতা প্রতিষ্ঠা করেছে একটি নতুন কারখানা। সেখানেই তৈরি হবে ভিসতা ও অক্স ব্র্যান্ডের এয়ারকন্ডিশনার।
ভিসতা’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান হোসেন আকাশ জানান, কোয়ানটিটির চেয়ে কোয়ালটিতে তারা বেশি জোর দিয়েছেন। তার বিশ্বাস, কোয়ালিটি ভালো, পণ্য টেকসই হলে তা ক্রেতারা গ্রহণ করবেনই। তিনি জানান, ভিসতার লক্ষ্য, আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশের এয়ারকন্ডিশনার (এসি) বাজারে সিংহভাগ নিজেদের করে নেওয়া।
উল্লেখ্য, অক্স হচ্ছে চায়নার একটি বিশাল শিল্পগোষ্ঠী। এটি বিশ্বের দ্রুত অগ্রসরমান একটি ব্র্যান্ড। ১৯৮৬ সালে অক্সের যাত্রা শুরু। ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল, পাওয়ার ইউটিলাইজেশন, পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন, নিউ এনার্জি, হাসপাতালসহ ইনভেস্টমেন্ট শিল্পেও বড় বিনিয়োগ রয়েছে অক্স-এর।
অক্স এয়ার কন্ডিশনার পৃথিবীর ১২৬ টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হয়। দেশ-বিদেশে অক্স-এর ম্যানুফ্যাকচারিং বা উৎপাদন কারখানা রয়েছে ১৪টি। জার্মানি, পোল্যান্ড, মেক্সিকো, থাইল্যান্ডসহ ৬টি বৃহৎ আরঅ্যান্ডডি (গবেষণা ও উন্নয়ন) সেন্টার রয়েছে তাদের। ডিজাইন, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার, সবশেষ প্রযুক্তির ব্যবহারে অতি উচ্চমানের কারণে আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্র্যাচ্যে সবচেয়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে অক্স। এই ব্র্যান্ডটি যে বাজারেই প্রবেশ করছে, সেখানেই ক্রেতাদের সমীহ আদায় করে নিচ্ছে।